৫০ বৎসরের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান চলছে প্রতরণামূলক মালিকানায় – Naf TV

৫০ বৎসরের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান চলছে প্রতরণামূলক মালিকানায়

নুরুল হোসাইন,টেকনাফ::
ঐতিহ্যবাহী নাফ পেট্রোল সার্ভিস একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। ৫০ বৎসরের প্রতিষ্ঠান চলছে প্রতরণামূলক মালিকানায়। এ প্রতিষ্ঠানের মালিক হলেন মোঃ হোসেন। তিনি গত ৩০-০৭-১৯৯১ সালে মৃত্যু বরণ করেন। তার মৃত্যুর পর নাফ পেট্রোল সার্ভিসের মালিক হন আম্বিয়া খাতুন। বিগত ২৯-০১-২০১৯ সালে দীর্ঘ ৫ বৎসর যাবৎ ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে আম্বিয়া খাতুন মৃত্যু বরন করেন। “ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন”। আম্বিয়া খাতুন মৃত্যু খালে ওয়ারিশগণ হিসেবে ৪ সন্তান রেখে যান। তাহার ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হলেন, মোঃ দিদার হোসেন,মোঃ ইকবাল হেসেন, মোঃ রবিউল হোসেন ও মোঃ রেজাউল হোসেন।
বিগত ২০১৬ সালে মালিক আম্বিয়া খাতুন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে শালিসের বৈঠকের মাধ্যমে চুড়ান্ত বৈঠক করে কিভাবে ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করিবে তাহা উক্ত চুক্তিনামাতে উল্লেখ আছে।
তারমধ্যে দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে নাফ পেট্রোল সার্ভিসের মালিক আম্বিয়া খাতুন মৃত্যু হওয়ার পর চার ভাই উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক হওয়ার কথা।
এমতাবস্থায়, ১ম পুত্র মোঃ দিদার হোসেন, মোঃ ইকবাল হোসেন সহ তারা দুই জনে অন্য দুই ভাই মোঃ রবিউল ও মোঃ রেজাউল হোসেন এর সাথে প্রতারণা করে টেকনাফ পৌরসভা থেকে ট্রেডলাইসেন্স নবায়ন করে।
এ ট্রেডলাইসেন্স বিষয়ে বাকী ২ ভাই কিছুই জানেনা বা অবগত নয়। পরবর্তীতে তারা দুই ভাই জানার পর টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজী মোঃ ইসলাম এর বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
উক্ত অভিযোগটি টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজী মোঃ ইসলাম সঠিক তদন্ত করে ট্রেডলাইসেন্সটি বাতিল করেন মেয়র।
নাফ পেট্রোল সার্ভিসের মালিক আম্বিয়া খাতুন এর ওয়ারিশগণ ৪ সন্তানের নামে ট্রেডলাইসেন্স অনুমোদন দেন। যেহেতু মায়ের ভিত্তির উপর ৪জনই সত্বাধিকারী।
পরিশেষে তদন্ত করে আপডেট ট্রেডলাইসেন্স প্রদান করার জন্য টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজী মোঃ ইসলাম কে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানালেন, নাফ পেট্রোল সার্ভিস কর্তৃপক্ষ মোঃ রবিউল হোসেন ও মোঃ রেজাউল হোসেন। জালিয়াতি ট্রেডলাইসেন্স বাতিল করে যথাসময়ে ন্যায় বিচার পাওয়ায় মেয়রের সার্বিক মঙ্গল কামনা করেন নাফ পেট্রোল সার্ভিস পরিবার।
সরেজমিনে জানা যায়, নাফ পেট্রোল পাম্পের তত্ত্বাবধায়ক মোঃ দিদার হোসেন গং দীর্ঘদিন ধরে তাহাদের পৈত্রিক ও মাতৃক সম্পত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত নাফ পেট্রোল পাম্পের লাইসেন্স তাহার মা আম্বিয়া খাতুনের নামে করে তাদের নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালিয়ে আসছিল। কিন্তুু তাহার মা মৃত্যুর পরে তাহার চার সন্তান যৌথভাবে একই স্থানে ও সম্পদ থেকে ব্যবসা পরিচালনা করে পরম সুখে ভোগ করে আসছিলেন।
কিন্তুু তাদের চার ভাইয়ের মধ্যে দুই ভাইকে অভিহিত না করে তাদের সম্পত্তি বা ব্যবসা থেকে বঞ্চিত করতে মোঃ দিদার হোসেন ও ইকবাল হোসেন সহ অবৈধভাবে এলপিজি অটো গ্যাস ষ্টেশন চালু করে ব্যবসা করে আসছিল। যা রবিউল হোসেন সহ অপর ভাইয়ের সম্পূন্ন অজানা বলে দাবি করেন।
নাফ পেট্রোল পাম্পের মালিক রবিউল হোসেন জানান,নাফ পেট্রোল সার্ভিসের প্রোফাইটার মোঃ রবিউল হোসেন বলেন, গত (২৪মে) বুধবার দুপুরে টেকনাফ পৌর শহরের নাফ পেট্রোল পাম্পের এল পি জি অটো ষ্টেশন এনওসি’র লাইসেন্স ছাড়া এল পি জি গ্যাস বিক্রির অভিযোগে টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এরফানুল হক চৌধুরী অভিযান পরিচালনা করেন।
নাফ পেট্রোল সার্ভিস প্রতিষ্টানের মালিক মোহাম্মদ হোসেন এর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন এর ৪ সন্তানদের দিয়ে প্রতিষ্টানটি পরিচালনা করতেন।
পরিচালনা করতে গিয়ে মোঃ দিদার হোসেন ও ইকবাল হোসেনকে ২০১৮ সালে আট বছরের জন্য কোন লিখিত রেজিষ্ট্রার্ড চুক্তি দেই নাই। আম্বিয়া খাতুন তখন হাসপাতালে মুমূর্ষ অবস্থায় ছিলেন।
ভূয়া টিপ দিয়ে জ্বাল দলিল বানিয়ে এতদিন ব্যবসা চালিয়েছেন। ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করে ‘এলপি গ্যাস’ স্টেশন প্রতিষ্টা করেন দিদার আর ইকবাল। অথচ অন্য দুই ভাই রবিউল আর রেজাউল কিছুই জানেনা এবং ব্যবসা থেকে বঞ্চিত করেন।
আমার মায়ের মৃত্যুর পরে আমাদের অজান্তে ভুয়া লাইসেন্স, ভুয়া ইজারাদার দলিল দেখিয়ে আমার বড় ভাই এলপিজি গ্যাস এককভাবে মালিকানা করে ব্যবসা চালিয়ে আসছে যা আমরা জানি না। তবে আমাদের মায়ের দেওয়া বিধি অনুযায়ী আমরাও ওই এলপিজি গ্যাস ষ্টেশান টি হতে সমান ভাগ পাব। যেহেতু নাফ পেট্রোলপাম্পের লাইসেন্স আমার মায়ের নামে। কিন্তুু সে এখন আমাদের দুই ভাইকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত করে। আমরা এ বিষয়ে যথাযথ বিচার আশা করছি।
রবিউল আরো জানান, আমরা দুই ভাই সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার পর মোঃ রবিউল হোসেন, মোঃ রেজাউল হোসেন সহ বাদী হয়ে কোর্টে মামলা করি। যাহা এম আর মামলা নং-৮১৯/২০২৩ ইং।
নাফ পেট্রোল পাম্পের মালিক রেজাউল হোসেন বলেন, আমরা ৪ ভাইয়ের নামে ট্রেড লাইসেন্স থাকার পরও ভূয়া দুই জনের নামে ট্রেড লাইসেন্স করে অবৈধভাবে এলপিইজি গ্যাস ষ্টেশন তৈরি করেছেন আমার দুই ভাই দিদার হোসেন ও ইকবাল হোসেন।
আমার ভাই দিদার রাত হলে মদপান করে। ঘরের পরিবেশ ধ্বংস করে ফেলে। থাকার কোন পরিবেশ থাকে না। তাঁর একমাত্র পেশা মদপান করা।
তিনি আরো জানান, অনাপত্তি সনদপত্র ছাড়া কোন এলপিজি গ্যাস স্টেশন হয় না। অনাপত্তিতে প্রচার আছে আম্বিয়া খাতুনের নামে এমনকি নাফ পেট্রোল পাম্পও আম্বিয়া খাতুন নামে চুড়ান্ত প্রচার আছে। যেহেতু আম্বিয়া খাতুনের নামে উক্ত লাইসেন্স হওয়ার কথা কিন্তু ঐ অনাপত্তি সনদপত্রে বলে মোহাম্মদ দিদার হোসেন, মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন এর নামে বাংলাদেশ বিস্ফোরক অধিদপ্তর হইতে কিভাবে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভাবে অবৈধ।
এ অবৈধ লাইসেন্স হওয়ার কারনে প্রতারক দিদার হোসেন ও ইকবাল হোসেন এর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
রেজাউল আরো জানান, আইনে শরণাপন্ন হয়ে আমরা দুই ভাই মোঃ রবিউল হোসেন, মোঃ রেজাউল হোসেন কোর্টে বাদী হয়ে মামলা করেছি। যাহা বর্তমান চলমান।